সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ শীতকালীন সবজি চাষে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির কৃতিত্ব অনেক পুরাতন। শীত মৌসুম আসার শুরুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ঝালকাঠির কৃষকরা। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ২২টি গ্রামের কৃষকদের সহায়তা করে সবজি চাষে সবুজ বিপ্লব ঘটান নারীরা। সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার এমনই গল্প শোনালেন সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান গ্রামের আব্দুল হক তালুকদার। তিনি জানান, বেকারত্ব জীবন ও দরিদ্র বাবার সংসারের ঘানি টেনে পড়া লেখা করতে না পেরে সবজি চাষে আগ্রহী হন। অন্য লোকের জমিতে কাজ করে ২ বিঘা জমি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সবজির চাষ শুরু করেন। ঝালকাঠি বাজারে সবজির চাহিদা ভালো থাকায় প্রথমে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ম্যাজিক শিম, শসা, পেঁপে, কুমড়া, মুলা, লাল শাক, ঢেঁড়স, টমেটো, লাউ ও খিরা চাষ করেন। এসব সবজি বাজারে বিক্রি করে বেশ লাভ হতে থাকে। ১০ হাজার টাকা খরচ করে এক মৌসুমে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকার সবজি বিক্রি করেন। এখন সারা বছরই তার জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হচ্ছে। সবজি চাষ করেই বর্তমানে তার সংসার চলে। বর্তমানে সে তার জমিতে শীতকালীন সবজি, শসা ও খিরা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এলাকাবাসী জাহাঙ্গির হোসেন জানান, আব্দুল হক একজন আদর্শ সবজি চাষি। তার দেখা দেখি এলাকায় অনেকেই সবজি চাষে আগ্রহী হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে সবজি কিনে গ্রাম ও শহরের বাজারে বিক্রি করেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর প্রায় এক লক্ষ টাকা বেচা-কেনা করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। তিনি আরও জানান, সবজি চাষে সহযোগিতা করেন তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেরা।
আব্দুল হক তালুকদার জানান, ২৫ বছর ধরে সবজি চাষে নিয়োজিত থাকলেও সদর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে একবারও বিনা মূল্যে সার ও কীটনাশক ওষুধ সহযোগিতা পায়নি বা দেওয়া হয়নি। ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বর্তমানে সুখে জীবন যাপন করছেন আব্দুল হক তালুকদার। তিনি সরকারি অনুদানসহ কৃষি খামার বাড়ির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। আমার জমিতে ফসল আল্লাহর ইশারায় হয়, আল্লাহর ওপর আমার ভরসা আছে বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
ঝালকাঠি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিফাত সিকদার জানান, আসলে কোথায় কী ফসল হয়েছে সেটা জানি না। যদি কোনো ধরনের সমস্যা হয় তাহলে আমাদের জানালে আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারি। আমাদের প্রত্যেক এলাকা ভিত্তিক কমিটি বা ব্লক আছে। প্রতিটা ব্লকেই একজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োজিত আছেন। তাদের জানালে তারা দেখে আমাকে অবহিত করবে। আর আমাদের কৃষি অফিস থেকে কোনো কীটনাশক ওষুধ দেওয়া হয় না। এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানরা যাদের নামের তালিকা দেয় তাদের সার দেওয়া হয়।
Leave a Reply